রহস্য ঘেরা ‘ভূতের দ্বীপ’!

আফ্রিকার বৃহত্তম মিঠা পানির হ্রদ ভিক্টোরিয়া হ্রদের মাঝখানে অবস্থিত একটি ছোট কিন্তু রহস্যময় দ্বীপ মুসাম্বওয়া, যাকে স্থানীয়রা ‘ভূত দ্বীপ’ নামেই চেনে।

মাত্র পাঁচ একরের এই দ্বীপ জীববৈচিত্র্য, সংস্কার ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের এক অপূর্ব মেলবন্ধন।

ভিক্টোরিয়া হ্রদের তীর থেকে প্রায় ৪৫ মিনিটের নৌকা ভ্রমণে পৌঁছানো যায় এই দ্বীপে।

এটি হ্রদের ৮৪টি দ্বীপের একটি এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্রের আবাসস্থল।

দ্বীপে প্রায় ২ হাজার সাপের আবাস, যার মধ্যে রয়েছে গ্যাবুন ভাইপার ও মিশরীয় কোব্রার মতো বিষাক্ত প্রজাতি।

রয়েছে পাখির উপনিবেশ, স্থানীয় উদ্ভিদ ও অন্যান্য প্রাণী।

দ্বীপের জনসংখ্যা মাত্র ১২৫ জন, যারা বন্যপ্রাণীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বসবাস করে।

স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, দ্বীপে আত্মা বা ভূতের বসবাস, যারা নারীদের উপস্থিতি পছন্দ করে না। তাই দ্বীপে নারীদের রাত কাটানো নিষিদ্ধ।

লোকমুখে প্রচলিত আছে, নারীরা দ্বীপে রাত কাটালে দুর্যোগ নেমে আসে।

২০০০ সালের দিকে নেচার উগান্ডার মতো সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টায় দ্বীপে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়।

পাখির ডিম খাওয়া বন্ধ হয়েছে, পাখি শিকার নিষিদ্ধ হয়েছে। দ্বীপবাসী এখন প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সচেতন ও দায়িত্বশীল।

দ্বীপটি বর্তমানে প্রকৃতিপ্রেমী ও গবেষকদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্য হলেও পর্যটনের চাপ এবং স্থানীয় রীতিনীতির অগ্রাহ্যতা দ্বীপের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে।

মুসাম্বওয়া দ্বীপ প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার অনন্য এক উদাহরণ। এর সংরক্ষণ কেবল পরিবেশগত কারণে নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার দিক থেকেও অত্যন্ত জরুরি।

স্থানীয় বিশ্বাস ও পরিবেশগত ভারসাম্যের প্রতি সম্মান দেখিয়ে পর্যটন পরিচালনা করতে পারলেই দ্বীপটি ভবিষ্যতেও তার রহস্য ও সৌন্দর্য ধরে রাখতে পারবে।