রাশিয়াকে ঘিরে দুটি সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের কথার লড়াইয়ের মধ্যে এই পদক্ষেপ নিল হোয়াইট হাউস।
ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে। ঠান্ডা যুদ্ধের দিনগুলোতে তারা নানা রকম সামরিক সরঞ্জাম বাড়িয়েছে।
বিশ্বের দুই পরাশক্তি শুধু ভূমি ও আকাশপথেই নজর দেয়নি, শক্তি বাড়িয়েছে সমুদ্রেও। আর সমুদ্র শাসন করতে সাগরের তলদেশে একের পর এক হাজির করেছে সাবমেরিন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশের পর দুই দেশের সাগরের তলদেশে শাসন করার লড়াই আরেকবার ফিরে।
কিন্তু সমুদ্র শাসনের অদৃশ্য লড়াইয়ে আসলে কে কতটা এগিয়ে আছে?
সমুদ্রে রাশিয়া না যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী?
সাগরের তলদেশে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র- দুই দেশেই প্রচুর শক্তি মজুদ করেছে। অন্যকে ছাড় না দেয়ার বার্তা দিতেই বড় করেছে নিজেদের বহর।
আগে জেনে নেই কার ভান্ডারে কি কি মজুদ আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন শক্তি
১. ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন (Ohio-class SSBN)
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও শ্রেণির পরমাণু সাবমেরিনগুলোকে বলা হয় “Boomers”। এদের রয়েছে চরম গোপনীয়তা এবং নির্ভুল পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সক্ষমতা।
যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরণের মোট ১৪টি সাবমেরিন রয়েছে সক্রিয় অবস্থায়। প্রতিটি সাবমেরিন ২০টি Trident D5 SLBM বহনে সক্ষম।
এই সামেরিন একবার সমুদ্রে গেলে ১৫ বছর পর্যন্ত বড় কোনো মেরামত ছাড়াই কাজ করতে পারে।
২. আক্রমণাত্মক সাবমেরিন (Virginia, Seawolf, Los Angeles-class)
এই শ্রেণির সাবমেরিনগুলোর প্রধান উদ্দেশ্য শত্রুর নৌযান ধ্বংস, গোয়েন্দা নজরদারি এবং স্পেশাল অপারেশনস।
Virginia-class: সবচেয়ে আধুনিক, টমাহক মিসাইল ও ডুবুরি লক-আউট সিস্টেমসহ এ ধরণের ২৪টি সাবমেরিন আছে যুক্তরাষ্ট্রের।
Seawolf-class: ভারী অস্ত্র বহনে সক্ষম, তবে উল্লম্ব উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা নেই- এমন ৩টি সাবমেরিন আছে মার্কিনীদের।
Los Angeles-class (688-class): এ ধরণের প্রায় ২৪টি সক্রিয় সাবমেরিন আছে ওয়াশিংটনের।
রাশিয়ার সাবমেরিন শক্তি
১. ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন (Borei-class, Delta IV-class)
রাশিয়ার নৌবাহিনীতে আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাবমেরিন বহর। তাদের মূল পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী সাবমেরিনগুলো হলো:
Borei-class: এ ধরণের ৮টি সাবমেরিন সক্রিয় আছে; যার প্রতিটি ১৬টি Bulava SLBM বহনে সক্ষম, সাথে টর্পেডো ও সাবমেরিন-বিরোধী রকেট।
Delta IV-class: এ ধরণের ৬টি সক্রিয় সাবমেরিনের প্রতিটি ১৬টি Sineva SLBM বহনে সক্ষম।
২. আক্রমণাত্মক সাবমেরিন (Yasen-class, Akula-class)
রাশিয়ার এসব সাবমেরিন গোপনে আক্রমণ ও নজরদারির জন্য ব্যবহৃত হয়।
Yasen-class: এ ধরণের ৪টি সাবমেরিন Kalibr বা Oniks মিসাইল বহনে সক্ষম।
Akula-class: “Shark” নামে পরিচিত এমন ৫টি সাবমেরিন আছে রাশিয়ার। এগুলোকে বলা হয় নীরব ঘাতক, যেগুলো Kalibr বা Granit মিসাইল ব্যবহারে সক্ষম।
রাশিয়া না যুক্তরাষ্ট্র- সাবমেরিনে কে এগিয়ে?
রুশ পার্লামেন্ট সদস্য ভিক্টর ভোডোলাস্কি দাবি করেছেন, “বিশ্বের মহাসাগরে রাশিয়ার পরমাণু সাবমেরিন সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক বেশি।”
সংখ্যায় রুশরা এগিয়ে থাকলেও বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তিগত দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র মস্কোর তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে।
তবে রাশিয়ার সাবমেরিনের বিস্তৃতি ও আক্রমণক্ষমতাও কম নয়- বলছেন তারা।