উচ্চ পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে কলার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।
পটাশিয়ামের প্রয়োজন হলে সাধারণত যেসব খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়, সেখানেও কলাকে সবার আগে বিবেচনা করা হয়।
কিন্তু আমাদের হাতের কাছেই এমন কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলোতে পটাশিয়ামের পরিমাণ কলার চেয়েও বেশি।
এসব খাবার সম্পর্কে জানা থাকলে কম খরচেই আপনি পটাশিয়ামের চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারবেন।
পটাশিয়াম কেন গুরুত্বপূর্ণ?
প্রতিদিনের পুষ্টি উপাদানের মধ্যে পটাশিয়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীর ঠিক রাখতে খাবারে পর্যাপ্ত পটাশিয়াম রাখা উচিত।
আমাদের হার্ট, পেশী, ব্রেন ও কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
কিডনিতে পাথর জমা ঠেকিয়ে কিডনির কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে পটাশিয়াম।
রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে পটাশিয়াম, ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
এছাড়া হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে হাড়কে মজবুত রাখতে কাজ করে পটাশিয়াম।
দিনে কতটুকু পটাশিয়াম প্রয়োজন?
দিনে পটাশিয়ামের চাহিদা নির্ভর করে বয়স, নারী-পুরুষ ইত্যাদির ওপর।
প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দিনে ৩৪০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম দরকার হয়, প্রাপ্তবয়স্ক নারীর দিনে প্রয়োজন হয় ২৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
দুধ পান করান এমন নারীর দিনে ২৮০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়ামের প
কলায় পটাশিয়ামের পরিমাণ
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে অন্যতম কলা। সব ধরণের কলাতেই পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে।
একটি কলায় সাধারণত ৪৫১ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে।
এরপরও এমন কিছু সাধারণ খাবার রয়েছে, যেগুলোতে পটাশিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি।
যদিও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে এগুলো খুব বেশি নজর কাড়তে পারেনি।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
বেশ কিছু সাধারণ খাবার রয়েছে, যেগুলোতে ব্যাপক পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে।
নীচে সেসব খাবারের তালিকা রইলো-
১. আলু
আলু বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় খাবারগুলোর একটি। শুধু সহজলভ্য ও সস্তাই নয়, পুষ্টিতেও আলু অনেক এগিয়ে।
উচ্চ কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ এই খাবার সহজেই আমাদের শরীরে শক্তি জুগায়। রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাসের মত উপাদান।
এছাড়া একটি মাঝারি সাইজের সেদ্ধ আলুতে পাবেন ৯৫২ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, যা কলার তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।
২. ডাল
ডালও খাবারের পাতে নিয়মিত থাকে, দামেও তুলনামূলক কম। পুষ্টিসমৃদ্ধ এই খাবার পটাশিয়ামেরও ভাল উৎস।
১ কাপ রান্না ডালে ৭৩১ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম পাওয়া যাবে।
ডালে এছাড়াও পাবেন ফাইবার, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, লাইজিনের মত পুষ্টি উপাদান।
৩. কুমড়া
এখন সারাবছরই বাজারে কুমড়া পাওয়া যাচ্ছে। ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই এর চমৎকার উৎস কুমড়া।
পটাশিয়ামের জোগান দিতেও এগিয়ে এই সবজি। ১ কাপ রান্না করা কুমড়ায় পাবেন ৫৬৪ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
৪. পেয়ারা
ভিটামিন সি’র উৎস হিসেবে পেয়ারা বিখ্যাত। বাজারে সহজেই পাওয়া যায়, দামেও কম।
এই ফল আবার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ফলের তালিকায়ও এগিয়ে আছে পেয়ারা। ১ কাপ পেয়ারায় ৬৮৮ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম পাবেন।
৫. তরমুজ
গরমের সময়ে স্বস্তির খাবার হিসেবে তরমুজ ব্যাপক জনপ্রিয়। গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানেও পিছিয়ে নেই তরমুজ।
মাঝারি আকারের তরমুজ কেটে ২টি চিড় খেয়ে নিলেই পেয়ে যাবেন ৬৪০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
৬. দই
প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ দই হাড়-মেরুদণ্ডের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হিসেবেও দই এগিয়ে আছে। দিনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির পটাশিয়াম চাহিদার ২০ ভাগই পূরণ করতে পারে দই।
১ কাপ দইয়ে রয়েছে ৫৭৩ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
৭. সয়াবিন
প্রোটিনের চমৎকার উৎস সয়াবিন পটাশিয়ামের ভাল জোগানদাতা।
দিনে একজন মানুষের যে পরিমাণ পটাশিয়াম দরকার, তার ৩ ভাগের ১ ভাগ পটাশিয়াম মিলে যাবে এক কাপ সয়াবিনে।
১ কাপ রান্না করা সয়াবিনে ৮৮৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে।
৮. মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু ব্যাপক পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার। ফাইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, জিংক, বেটা ক্যারোটিনের চমৎকার উৎস মিষ্টি আলু।
সঙ্গে রয়েছে উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম। ১টি বড় সেদ্ধ মিষ্টি আলুতে ৮৫৫ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকতে পারে।