হিমেশ রেশমিয়ার ‘ফিরে আসা’

জনপ্রিয় বলিউড গায়ক ও সুরকার হিমেশ রেশমিয়া আবারও মঞ্চে ফিরে এসেছেন, সঙ্গে ভক্তদের ভাসিয়েছেন ‘নাকি কন্ঠের’ জাদুতে।

দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী এরিনায় টানা দুই দিন তার কনসার্টে ভিড় করেছেন হাজার হাজার ভক্ত।

প্রায় দুই দশক আগে নিজের অনন্য গায়কী দিয়ে বলিউডকে নতুন এক ধারা দিয়েছিলেন হিমেশ। সেসময় ভারতের প্রতি মোড়ে মোড়ে বাজতো তার গান, দিল্লির কনসার্ট ছিল শ্রোতাদের কাছে সেই পুরনো দিনকে উদযাপন করার মঞ্চ।

“মুখ দিয়ে গাইবো, না নাক দিয়ে?”- কনসার্টের শুরুর এই প্রশ্নেই শুরু হয় শ্রোতাদের আবেগের বিস্ফোরণ। হিমেশ গাওয়া শুরু করেন তার বিখ্যাত হিট গান ‘আশিক বানায়া আপনে’, আর দর্শকরা ফিরে যান সেই সোনালি দিনে।

নতুনদের পাশাপাশি বহু পুরোনো ভক্ত কনসার্টে হাজির ছিলেন হিমেশের বিখ্যাত কালো জ্যাকেট ও লাল ক্যাপ পরে। কনসার্টে ছিল ব্যাকিং অর্কেস্ট্রা, আলো-সাউন্ডের চমক আর নাচের দল।

এক সময় সমালোচনায় বিদ্ধ হওয়া হিমেশ নিজের অনন্য ভঙ্গিকে শক্তিতে রূপান্তর করেছেন। সবার চোখে তিনি এখন শুধু গায়ক নন, বরং এক ‘পপ-কালচার আইকন’।

তার এক ভক্তে ভাষ্য- “হিমেশের গানগুলো এখনো মন ছুঁয়ে যায়। এই গানগুলো আজও কাঁপায়।”

হিমেশের ফিরে আসা যেন এক বিষণ্ন সময়ের মধ্যেও সংগীত ভালোবাসার বিজয়।

একজন তরুণী বলছিলেন, “এই গানগুলো আমার কৈশোরের সাউন্ডট্র্যাক ছিল। মনে হচ্ছে যেন টাইম ট্রাভেল করে ফিরে গেছি।”

সমালোচনা থেকে সংস্কৃতিতে

হিমেশ রেশমিয়া সবসময়ই একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছেন। কেউ তার কণ্ঠকে হাস্যরসের বিষয় হিসেবে দেখেছে, কেউবা ভালোবেসেছে সেই কণ্ঠের আবেগকে।

যখন ২০০৫ সালে ‘আশিক বানায়া আপনে’ ছবির জন্য তিনি নিজেই গান গাওয়া শুরু করেন, তখন থেকেই শুরু হয় ‘নাকি’ কণ্ঠের যুগ।

অনেকেই বলতেন, তার গানে নাকি সুর আছে, কিন্তু প্রোডাকশন দুর্বল। তারপরও সেই গানগুলো হিট হতো- কারণ সেগুলোতে ছিল সহজ কথার আবেগ, টানটান সুর।

এরপর অভিনয়ে জগতে এলেও সেখানেও পেয়েছেন ট্রলের বন্যা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়- তিনি কখনো বিরক্ত হননি। বরং নিজেই মিমে অংশ নিয়েছেন, ট্রলের জবাবে আরও মজার কনটেন্ট দিয়েছেন।

কোভিডের সময় তার ‘পোকার ফেস’ ব্যায়ামের ভিডিও যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল, তেমনি তার উত্তর ছিল স্পষ্ট: “জীবনটাকে এত সিরিয়াসলি নিও না। ফ্যানদের সঙ্গে আমি শুধু ভাইব করছিলাম।”

ফিরে আসা অনন্য স্টাইলে

বর্তমানে হিমেশ তার পুরনো হিট গানগুলো নতুন করে গাইছেন, ঠিক আগের সেই স্বর ও আবেগ নিয়েই। অথচ শুনতে এতটাই সতেজ যে নতুন প্রজন্মও তাতে নাচছে, গাইছে।

কনসার্টে হিমেশ বারবার বলছিলেন: “তারা বলছে ১০টায় অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। কিন্তু তোমরা কি চাও আমি সারারাত গান গাই?” ভক্তদের উত্তরে যেন শহরজুড়ে বাজে হর্ষধ্বনি।