বাংলাদেশের কক্সবাজারে মার্কিন সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
বিশেষ করে, দেশটির সমুদ্র সৈকতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও বিমান বাহিনী কি করছে- তা নিয়েই সরব হয়েছেন অনেকে।
কক্সবাজারে তোলা আমেরিকান বাহিনীর সদস্যদের কিছু ছবি শেয়ার করে ফেইসবুকে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
কেউ কেউ এমনও বলছেন যে, বাংলাদেশে মার্কিন সেনারা বড় ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন।
কক্সবাজারে মার্কিন সেনাবাহিনী কেন?
কক্সবাজারে মার্কিন সেনা ঢুকেছে মূলত একটি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতে।
এর সঙ্গে জড়িত ঢাকার ইউএস অ্যাম্বাসি ও বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস।
তাদের উদ্যােগে বঙ্গোপসাগরে ফায়ার সার্ভিসের ১৫ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
মার্কিন সেনারা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের মূলত একটি বিশেষ বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে এই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
সেটি হচ্ছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পানিতে ভেসে যাওয়া মানুষকে উদ্ধার করা। সেজন্যই প্রশিক্ষণের জন্য কক্সবাজারকে বেছে নেয়া হয়েছে।
কারণ, বঙ্গোপসাগর পৃথিবীর দুর্যোগপূর্ন এলাকাগুলোর একটি। ফলে নিয়মিতই ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের সাক্ষী হয় কক্সবাজারসহ দেশের উপকূলবর্তী এলাকা।
আর এসব দুর্যোগে মানুষকে রক্ষার কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
তারা এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসে মানুষ ভেসে গেলে তাদের কিভাবে সহজে দ্রুত উদ্ধার করা যাবে- সেই কৌশল মার্কিন সেনাবাহিনীর কাছ থেকে শিখতে চেয়েছেন।
মার্কিন সেনারা কক্সবাজারের কোথায় গিয়েছেন?
কক্সবাজারে মার্কিন সেনারা ছিলেন মূলত ইনানি বিচ এলাকায়। সমুদ্র সৈকতের এই অংশে তারা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, তুলনামূলক নিরিবিলি এলাকা হওয়ায় প্রশিক্ষণের এই এলাকাকে বেছে নেয়া হয়েছে।
সেখানে লাইফজ্যাকেট পড়ে ১৫-২০ জনের একটি দলকে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় কার্যক্রম চালাতে দেখা গেছে।
এছাড়া প্রশিক্ষণের জন্য তারা সুইমিং পুলও ব্যবহার করেছেন।
মার্কিন সেনারা এখন কোথায়?
মার্কিন সেনারা বাংলাদেশে এসেছিলেন ৩ দিনের প্রশিক্ষণ দিতে।
৩ দিনের এই প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে বুধবার, শুরু হয় ১৮ মে।
প্রশিক্ষণ দেয়া শেষ করে মার্কিন সেনারা কক্সবাজার ছেড়েছেন।
আমেরিকান সেনা সদস্যরা এখন আর বাংলাদেশে নেই। তারা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন।
কক্সবাজারে মার্কিন সেনা নিয়ে আলোচনা কেন?
বিশ্বজুড়েই নানা কারণে সাধারণ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রমকে সন্দেহের চোখে দেখে। মানুষ মনে করে, তাদের কাজের পিছনে ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
বাংলাদেশেও আমেরিকা সম্পর্কে নানা নেতিবাচক ধারণা রয়েছে মানুষের মধ্যে।
বিশেষ করে, দেশটিতে সরকার পরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে সন্দেহ বেড়েছে। অনেকে মনে করছে, বর্তমান সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক থাকতে পারে।
সেন্ট মার্টিন ও পার্বত্য এলাকা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে বাংলাদেশে।
এমন এক সময়ে কক্সবাজারে মার্কিন সেনাদের আসা স্বাভাবিকভাবেই আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক করিডরের সঙ্গে ইউএস আর্মির কোন সম্পর্ক আছে কিনা, তা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলছেন।
কারও মন্তব্য- সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে কিছু হতে যাচ্ছে কিনা।
যদিও মার্কিন সেনারা কক্সবাজারে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে এসেছেন এবং ফিরে গেছেন।