এয়ারকার: যে গাড়ি উড়তে ও চলতে পারে

ভবিষ্যতে আপনি হয়তো আপনার গ্যারেজেই পার্ক করবেন একটি গাড়ি, যেটি আবার মুহূর্তেই রূপ নিতে পারবে একটি উড়োজাহাজে। এ যেন বাস্তব হয়ে ওঠা বিজ্ঞান কল্পকাহিনি!

স্লোভাকিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ক্লেইন ভিশন সম্প্রতি প্রকাশ করেছে তাদের সর্বশেষ ‘এয়ারকার’ নামক ডুয়াল-মোড প্রোটোটাইপ, যা একসাথে গাড়ি ও উড়োজাহাজ হিসেবে কাজ করতে সক্ষম।


এয়ারকারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর প্রত্যাহারযোগ্য ডানা, ভাঁজযোগ্য লেজের পৃষ্ঠ এবং প্যারাসুট স্থাপন ব্যবস্থা।

নতুন মডেলটিতে যুক্ত করা হয়েছে একটি উন্নত বিমান ইঞ্জিন, যার শক্তি ২৮০ থেকে ৩০০ অশ্বশক্তি পর্যন্ত। এর ফলে গাড়ির মাটিতে চলার সময় গতি যেমন বাড়বে, তেমনি আকাশে উড্ডয়নের সময় সময়ও কম লাগবে।


২০২১ সালে ক্লেইন ভিশন তাদের প্রথম আন্তঃনগর ফ্লাইট সম্পন্ন করে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে স্লোভাকিয়া সরকার এর উড্ডয়নের উপযোগিতা স্বীকৃতি দিয়ে বিমান যোগ্যতার শংসাপত্র প্রদান করে।


কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা আন্তন জাজাক জানান, ‘এই প্রোটোটাইপটি বাজারের চাহিদা পূরণে প্রস্তুত। মাত্র দুই মিনিটেরও কম সময়ে এটি গাড়ি থেকে উড়োজাহাজে রূপান্তরিত হতে পারে।’


এয়ারকার ইতোমধ্যেই ১৭০ ঘণ্টা ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে এবং ৫০০-র বেশি টেকঅফ ও ল্যান্ডিং করেছে।


২০২৩ সালে কোম্পানিটি চীনের সাথে চুক্তি করে, যাতে জেমস বন্ড-স্টাইলের এই উড়ন্ত যান সেখানে উৎপাদন করা যায়।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের যান চালাতে পাইলট লাইসেন্স প্রয়োজন এবং নিরাপদ আকাশসীমা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত না হলে শহরের উপর দিয়ে এধরনের যান চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।


তবে সব জটিলতা সত্ত্বেও, এয়ারকার বাস্তবতা থেকে আর খুব বেশি দূরে নয়। এই প্রযুক্তির সফল বাস্তবায়ন আমাদের যাতায়াত পদ্ধতিতে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটাতে পারে।