ভারতে হঠাৎ ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে আলোচনা বাড়ছে কেন?

রাজনীতি আর জীবনের হিসেব তিনি চুকিয়ে ফেলেছেন ৪ দশক আগেই, কিন্তু ভারতের রাজনীতিতে ইন্দিরা গান্ধী কখনোই অতীত হননি।

ভারতের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে ইন্দিরা গান্ধী বরাবরই ভক্ত ও সমালোচকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে গেছেন।

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ উত্তেজনার মধ্যে ভারতের জনগণ আরেকবার স্মরণ করছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।

ইন্দিরা গান্ধী যে কারণে আবার আলোচনায়

আধুনিক ভারতকে যারা দীর্ঘ সময় শাসন করেছেন তাদের একজন ইন্দিরা গান্ধী। ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে তার রাজনৈতিক তৎপরতা ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে গভীর প্রভাব রেখেছে। যা তাকে মৃত্যুর পরও আলোচনা-সমালোচনায় রাখে।

এবার ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে আলোচনা সমরকৌশলী ও কূটনৈতিক হিসেবে।

ভারত-পাকিস্তানের কয়েকদিনের হামলা-পাল্টা হামলা শেষ হয়েছে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় হওয়া এই যুদ্ধবিরতি নিয়ে ভারতে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

পরিস্থিতির চাপ সামলিয়ে কৌশলী সিদ্ধান্ত নিতে না পারার জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করছেন অনেকেই।

এই আবহেই আলোচনায় ঢুকে পড়েছেন ইন্দিরা গান্ধী। চায়ের আড্ডা থেকে ফেইসবুক- যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আলোচনায় এনেছে নেহেরু কন্যাকে।

তাকে নিয়ে আলোচনার বিষয় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ। এই যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান ভেঙে জন্ম হয় নতুন দেশ, পূর্ব পাকিস্তান হয়ে যায় বাংলাদেশ।

এই যুদ্ধ বদলে দিয়েছিল গোটা দক্ষিণ এশিয়াকে, যার মাধ্যমে এ অঞ্চলে একচ্ছত্র শক্তিশালী হিসেবে বিশ্বের কাছে ওঠে আসে ভারত।

আর যুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা তাকে কিংবদন্তীতুল্য করে তুলে।

বাংলাদেশের লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়া, ভারতে বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে কার্যক্রম চালাতে দেয়া- বৈশ্বিক চাপ উপেক্ষা করে সাহসী সব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী।

সেই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। তাতে দমে না গিয়ে ইন্দিরা বিশ্ব জনমতকে বাংলাদেশের মুক্তির দিকে টেনে আনার প্রচেষ্টা চালান, রাশিয়ার মত শক্তিধর দেশের সমর্থনও আদায় করে নেন।

পাশাপাশি মিত্র বাহিনী হিসেবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয় ভারতীয় বাহিনী। চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন অনমনীয়।

ইন্দিরার এই স্থিতধী মনোভাবই ভারতবাসী এখন স্মরণ করছে শ্রদ্ধার সঙ্গে। তারা বলছেন, ইন্দিরা গান্ধী থাকলে নিশ্চয়ই তিনি নরেন্দ্র মোদির পথে হাঁটতেন না!