কে এই খলিল আল-হাইয়া?

গাজায় যুদ্ধ থামাতে মিশরে যে পরোক্ষ আলোচনা হচ্ছে, তাতে হামাসের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন খলিল আল-হাইয়া।

তাকে হত্যার চেষ্টায় গত মাসে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী কাতারে নজিরবিহীন বিমান হামলা চালিয়েছিল, যা খলিল আল-হাইয়াকে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এনেছে।

গাজার বাইরে হামাসের যেসব নেতা রয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ খলিল আল-হাইয়া। ৬৪ বছর বয়সী এই নেতা হামাসের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক মুখ এবং আলোচক হিসেবে পরিচিত।

আল-হাইয়া অতীতেও বহুবার হামাসের আলোচনাকারী দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এবারও তিনি আরব ও মুসলিম বিশ্বের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন, যাতে মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি ও গাজকর ধ্বংসযজ্ঞ থামাতে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে।

গাজা নগরে জন্ম নেওয়া খলিল আল-হাইয়া হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর দীর্ঘদিনের সদস্য এবং ২০০৬ সালে নির্বাচিত ফিলিস্তিনি আইনসভার সদস্য।

তরুণ বয়স থেকেই তিনি হামাসের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে।

তাকে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে ইসরায়েল। তিনি বন্দি হয়েছেন, আবার মুক্তিও পেয়েছেন।

চলমান যুদ্ধে আল-হাইয়া নিজের পরিবারের বহু সদস্যকে হারিয়েছেন। সর্বশেষ কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় তার ছেলে হুমাম এবং অফিস পরিচালক জিহাদ লাবাদ নিহত হন।

এই ঘটনার পরও তিনি সংগঠনের নেতৃত্বে সক্রিয় রয়েছেন এবং শান্তি ও যুদ্ধবিরতির আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

গত শনিবার হামাসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে খলিল আল-হাইয়া প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা দেন।

ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “গাজায় প্রতিদিন যে হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংস দেখি, তা আমাকে আমার সন্তান ও প্রিয়জনদের হারানোর বেদনা ভুলিয়ে দেয়।”

আল-হাইয়া এখন হামাসের শীর্ষ কূটনৈতিক নেতাদের একজন, যিনি যুদ্ধবিরতির আলোচনায় সংগঠনটির মূল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।

তার নেতৃত্বে হামাসের প্রতিনিধি দল মিশরে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় বসেছে, একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজার পুনর্গঠনের পথ খুঁজতে।

এই আলোচনায় তার ভূমিকা শুধু রাজনৈতিক নয়, প্রতীকীও। কারণ, ইসরায়েলের একাধিক হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যাওয়া এই নেতা এখন হামাসের টিকে থাকার প্রতীক হয়ে উঠেছেন- যিনি নিজে ক্ষতবিক্ষত হয়েও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার জন্য নতুন ভবিষ্যতের সন্ধান করছেন।