তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। একই সঙ্গে দেশটির আকাশসীমা ও বন্দর ইসরায়েলি বিমান এবং জাহাজের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি বিশ্লেষকরা বলছেন, তরুস্কের পদক্ষেপে তেল আবিব বৈশ্বিকভাবে আরও কোনঠাসা হয়ে পড়বে।
গাজা যুদ্ধ নিয়ে তুরস্কের পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “গত দুই বছর ধরে ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে, মানবতার মৌলিক মূল্যবোধকে উপেক্ষা করছে- বিশ্ববাসীর সামনেই।”
ফিদান আরও জানান, “আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছি। আমাদের জাহাজগুলো ইসরায়েলের বন্দরে যাবে না, আর তাদের বিমান আমাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারবে না।”
ইসরায়েলকে ‘জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি’ মনে করছে আঙ্কারা
কারণ সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলাকে আঙ্কারা দেশটির পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় ইচ্ছাকৃত বাধা হিসেবে দেখছে।
কূটনৈতিক মহল মনে করছে, ইসরায়েলকে থামানো না গেলে ভবিষ্যতে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘাত হতে পারে।
বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন অবস্থান
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইসরায়েল প্রীতির কারণে তুরস্ক এখন বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে এবং বিকল্প শক্তির সমর্থন চাইছে।
তুরস্ক ইতোমধ্যেই ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে পশ্চিম তীরে বিক্ষোভ চলাকালে নিহত তুর্কি-আমেরিকান কর্মী আইসেনুর এজগি আইগির ঘটনার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয়।
ইসরাইলের জন্য বড় ধাক্কা
ইসরায়েলি বিশ্লেষক আকিভা এলদার বলেছেন, “তুরস্ক কেবল আরেকটি দেশ নয়, বরং বহু বছরের মিত্র। ইসরায়েলি পণ্যের জন্য তুরস্ক ছিল গুরুত্বপূর্ণ বাজার, আর পর্যটনেও দেশটি ছিল প্রিয় গন্তব্য।
“এখন ইসরায়েলিরা নিজেদের আরও বিচ্ছিন্ন মনে করছে।”
২০১০ সালেই দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়- গাজাগামী সহায়তা (ফ্লোটিলা) বহরে ইসরায়েলি হামলার পর, যেখানে ১০ জন তুর্কি নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। এরপর থেকে ধীরে ধীরে সম্পর্কের অবনতি ঘটছে।
তুরস্কের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত ইসরায়েলকে শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, কূটনৈতিকভাবেও একঘরে করার প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করল।
