স্টারলিংক প্যাকেজের খরচ ও কেনার নিয়ম

রিয়াজ ইসলাম

উচ্চগতির ইন্টারনেটের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের বাজারে সেবা দিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টারলিংক।

ফলে মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহারকারীরা এখন থেকে স্টারলিংকের সার্ভিসও নিতে পারবেন।

স্টারলিংক ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আজকের প্রযুক্তি আয়োজন।

কেন স্টারলিংক?

ডিজিটাল প্লাটফর্মে মানুষের ব্যস্ততা বাড়ায় বাংলাদেশে দিনদিনই ইন্টারনেটের চাহিদা বাড়ছে।

সেখানে প্রচলিত ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট সার্ভিসের গতি নিয়ে অনেক গ্রাহকের অভিযোগ রয়েছে।

ফলে ব্যবসায়িকভাবে যারা ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল, তারা উচ্চগতির ইন্টারনেটের জন্য স্টারলিংক ব্যবহার করতে পাররন।

এছাড়া বাংলাদেশের পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের বড় অংশই শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার বাইরে রয়ে গেছে।

দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগের কারণে তারা নানা ভাবে পিছিয়ে পড়ছেন।

এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে স্টারলিংক।

কারণ ইলন মাস্কের স্টারলিংকের তারবিহীন স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা সহজেই দুর্গম এলাকাকে ভার্চুয়াল জগতে সংযুক্ত করে দিতে পারছে।

কিভাবে স্টারলিংক কেনা যাবে?

বর্তমানে বাংলাদেশে অফিসিয়ালি কার্যক্রম চালু না করলেও প্রি-অর্ডার নিতে শুরু করেছে স্টারলিংক।

স্টারলিংক ইন্টারনেট কেনার জন্য Starlink-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (www.starlink.com) গিয়ে আপনার লোকেশন যাচাই করতে হবে।

তারপর প্রি-অর্ডার করতে হবে। প্রাথমিকভাবে ৯৯ ডলার বা প্রায় ১২ হাজার টাকা (ফেরতযোগ্য) জমা দিয়ে বুকিং দিতে হবে।

সার্ভিস চালু হলে সম্পূর্ণ কিট ও ইন্টারনেট সেবা অ্যাকটিভ করতে পুরো পেমেন্ট করতে হবে।

স্টারলিংকের প্যাকেজ খরচ কত?

বাংলাদেশে স্টারলিংক ২টি প্যাকেজে ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে।

১। রেসিডেন্সিয়াল
২। রেসিডেন্সিয়াল লাইট

রেসিডেন্সিয়াল প্যাকেজের মাসিক খরচ ৬ হাজার টাকা এবং রেসিডেন্সিয়াল লাইট প্যাকেজের মাসিক খরচ ৪ হাজার ২০০ টাকা।

উভয় প্যাকেজের জন্যই গ্রাহকদের এককালীন যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৪৭ হাজার টাকা খরচ করতে হবে।

স্টারলিংকের স্পিড কেমন?

স্টারলিংক মূলত লো আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট ব্যবহার করে। তাই এর ল্যাটেন্সি অনেক কম এবং স্পিড তুলনামূলক বেশি।

এটির ডাউনলোড স্পিড ৫০ থেকে ২০০ Mbps, আপলোড স্পিড ১০ থেকে ২০ Mbps এবং ল্যাটেন্সি ২০ থেকে ৪০ মিলিসেকেন্ড; যা প্রচলিত ব্রডব্যান্ডের তুলনায় অনেক গতিশীল।

বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেটের গতি খুবই দুর্বল, সেক্ষেত্রে স্টারলিংক হতে পারে অনলাইন কার্যক্রমের নির্ভরশীল মাধ্যম।

স্টারলিংকের সার্ভিস পেতে কত দিন লাগতে পারে?

স্টারলিংকের সার্ভিস চালু হলে বুকিংয়ের সময় অনুযায়ী গ্রাহকদের হাতে ১০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে কিট পৌঁছে যাবে।

তবে বাংলাদেশে কাস্টমসসহ কিছু জটিলতার কারণে স্টারলিংকের সরঞ্জাম পেতে ২ মাসের বেশি সময় লাগছে।

স্টারলিংকের বক্সে কি কি থাকে?

কিভাবে স্টারলিংকে সেবা পাবেন, তা জানার জন্য সঙ্গে একটি ইন্সটলেশন গাইড বইও পেয়ে যাবেন।

স্টারলিংক সেটআপ করবে কে?

সাধারণত স্টারলিংক কিট এমনভাবে ডিজাইন করা, যা ঘরে বসে নিজেই সেটআপ করে নিতে পারবেন।

নিজে করতে না চাইলে স্থানীয় টেকনিশিয়ান বা আইটি কোম্পানির সহযোগিতা নিতে পারেন।

ভবিষ্যতে স্টারলিংক স্থানীয় পার্টনার নিয়োগ দিলে, তাদের কাছ থেকেও সেবা পেতে পারেন।

বাংলাদেশের শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত মানসম্মত ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে স্টারলিংক হতে পারে একটি গেম-চেঞ্জার প্রযুক্তি।