মুহাম্মদ ফেরদাউস, কক্সবাজার
সিলেটের পাথরের মতো দখলদারদের বেপরোয়া আচরণে ঢেকে যাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়ির সৌন্দর্য।
রাতারাতি বালিয়াড়ি দখল করে শতাধিক দোকান বসে গেলেও তা ঠেকাতে প্রশাসনের কোন উদ্যােগ নেই।
এভাবে সৈকতের সৌন্দর্য জঞ্জালে ঢাকা পড়ায় পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও ক্ষুব্দ।
কক্সবাজার শহরের সৈকত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস করে বালিয়াড়ির বুকে একের পর এক নতুন দোকান বসাচ্ছে হকাররা।
কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্টে রাতারাতি শতাধিক দোকান ও হকারের ভিড় তৈরি হয়েছে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মোজাম্মেল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশে পর্যটনের প্রতি সরকারের কোন নজরই নেই।
” কক্সবাজারে মানুষ একটু রিলাক্স করতে আসে। এটাও জঙ্গল বানানো হচ্ছে। এগুলো দেখতে না পারলে প্রশাসনের কাজটা কি?”
স্থানীয়রা বলছেন, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক পদে রদবদল হওয়ার পর দখলদাররা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে।
তাদের দাবি, ২ জন আলোচিত ব্যক্তি এই দখল সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন, যাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, পতিতাবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ দোকান নির্মাণ থেকে শুরু করে নানা অপরাধের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
মামলা-কারাভোগের পরও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ফের সক্রিয় হয়েছেন তারা।
বালিয়াড়ির দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি তারা দোকানের জন্য নতুন করে ৭৪ টি কার্ড কিনেছেন এবং রাতের আঁধারে অন্তত ৩৪ টি দোকান বসানোর চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, সিন্ডিকেটের দাপটে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না, প্রতিবাদ করলে হুমকি আসে। রাজনৈতিক দাপটে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, অভিযোগ তাদের।
ফলে বালিয়াড়ি দখল, হকারদের কাছ থেকে দৈনিক চাঁদাবাজি, কটেজ জোনে মাসোহারা আদায়, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ- সবকিছুই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলছে প্রকাশ্যে।
বালিয়াড়িতে দোকান বসায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
সুগন্ধা ঝিনুক মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়নাল উদ্দিন বলেন, “এসবের প্রতিবাদ করে আমিও হুমকির মুখে পড়েছি। সাধারণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে।”

1 thought on “দোকানে ঢাকছে কক্সবাজার সৈকতের বালিয়াড়ি, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ”
Comments are closed.