সাজিদুর রহমান সাজিদ, রাবি প্রতিনিধি:
৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে রোববার।
আচরণবিধি অনুযায়ী এরপর থেকে প্রার্থীদের প্রচারণা শুরুর কথা থাকলেও সে পর্যন্ত অপেক্ষা করেননি অনেকেই।
ইতিমধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই ‘প্রচার-প্রচারণা’ চালিয়েছে বাম জোট, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলসহ বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট-এ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন ২০২৫, আচরণবিধি ধারা ৪(খ) এ বলা হয়েছে, ‘প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত সকল প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে। প্রচারণার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে।’
তবে তার আগেই রাবি ক্যাম্পাসে দেখা যায়, কখনো প্যানেল নিয়ে আবার কখনো ব্যক্তি উদ্যোগে প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চেয়েছেন; সে সব আবার প্রচার করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
কেউ কেউ আবার লিফলেট বিতরণও করে ফেলেছেন। ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের সংস্কৃতি সম্পাদক প্রদপ্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কাফী ‘দোয়া ও সমর্থন’ চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেছেন। শিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি, জিএস, এজিএসসহ অন্যান্য প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে জনসংযোগ চালিয়েছেন।
সে সব ভিডিও আবার প্রচার করেছেন তাদের ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ এর ফেসবুক পেজে। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে বিভিন্ন আবাসিক হলের রুমে রুমে আতর, চকলেট, মসজিদে বুকসেল্ফ উপহার দেয়ার পাশাপাশি তারা হলে পানির ফিল্টারও স্থাপন করেছেন।
আবার বাম জোটের প্যানেল ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ তাদের পরিচিতি প্রচার করেছে লিফলেটের মাধ্যমে। ইশতেহার তৈরিতে কিউআর কোডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মতামত ও পরামর্শও চেয়েছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদ মনোনীত প্যানেল ‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’ তাদের ভিপি, জিএস ও এজিএসের ছবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে গণ ইশতেহার আহবান করে জনসংযোগ চালিয়েছে। যা আবার তুলে ধরেছে ফেসবুকে।
এ বিষয়ে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের’ সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজার দাবি, তারা গণসংযোগ করেননি।
তিনি জানান, তারা নিজেদের সর্কেলের মধ্যে বসে পরামর্শ নিয়েছেন। শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছে।
ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবনের দাবি, তারা প্রচারণায় নামেননি, শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচিতি ও কুশল বিনিময় সেরেছেন।
“রাকসুর ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য যে পরিমাণ সময় দরকার সেটি নির্বাচন কমিশন দেয়নি। আমাকে যদি শিক্ষার্থীরা না-ই চিনে, তবে তারা আমাকে কেন বেছে নিবে?”
বাম জোটের প্যানেল ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদের’ সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী নাসিম সরকারও বলছেন, তারা প্রচারণা চালাননি, বরং ইশতেহার সংগ্রহ করেছেন।
ছাত্র অধিকার পরিষদ মনোনীত প্যানেল ‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জের’ সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী আল শাহরিয়ার শুভও তাদের কার্যক্রমের একই ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
আর রাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেতাউর রহমান জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রশাসন তদন্ত করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে।
