পোষ্য কোটা: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মুখোমুখি কেন?

‘পোষ্য কোটা’কে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। রাবিতে ভর্তির ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীরা। পোষ্য কোটাকে কেন্দ্রকরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে ধস্তাধস্তির মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে এবং ক্যাম্পাস জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এতে অহতও হয়েছেন অনেকেই।

**কোটা কি?
কোটা বলতে বোঝায় কোন কিছুর পূর্বনির্ধারিত পরিমাণ বা অংশ বা ভাগ বা বরাদ্দ যা সাধারণত একটি বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য নির্দিষ্ট থাকবে।
বস্তুত কোটা, সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত পদ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আমদানিকৃত পণ্যের সংখ্যার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
যেমন- সরকারি চাকুরিতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ৬০ শতাংশ নারী কোটা বরাদ্দের সুপারিশকরা হয়।

**পোষ্য কোটা কি?
কোন সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তান বা নির্ভরশীল সদস্যদের জন্য নির্ধারিত বিশেষ বরাদ্দকে পোষ্য কোটা বোঝানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা হলো, প্রতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তির সময় নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকা।
যেমন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তিতে কোটা প্রথা পূর্ণবহালের করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বরের ওপর ভিত্তি করে মেধা অনুসরণ করা হবে এবং ন্যূনতম পাস নম্বর থাকতে হবে। অর্থাৎ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানরা ন্যূনতম পাস নম্বর পেলে ভর্তি হতে পারবেন।

৮ নভেম্বর ২০২২ সালে দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটায় ৭১ জন প্রার্থী অকৃতকার্য হয়েও ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

**’পোষ্য কোটা’ নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মুখোমুখি কেন?

কোটা আন্দোলন ও জুলাই অভ্যুত্থানের পর এবছর ২ জানুয়াকোটা আন্দোলন ও জুলাই অভ্যুত্থানের পর এবছর ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে স্থায়ীভাবে ‘পোষ্য কোটা’ বাতিল করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গত ১৩ অগাস্ট থেকে ‘পোষ্য কোটা’ পুনর্বহালসহ আট দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি অংশ।
এই পরিপ্রেক্ষিতে, ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কমিটির সভায় ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

‘পোষ্য কোটা’ পুনর্বহালের সিন্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। যা রুপ নেয় আন্দোলন, বিক্ষোভ ও শিক্ষক শিক্ষার্থীর ধাক্কাধাক্কির মতো ঘটনায়।

**কোটা পক্ষে বিপক্ষে সমালোচনা:
পোষ্য কোটা মেধাবীদের জন্য একটি বাঁধা বলে মনে করা হয়।
অন্যদিকে, এটিকে কর্মচারীদের পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন অনেকেই।