ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে নেপাল

কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের পর নেপালজুড়ে ব্যাপক সহিংস ঘটনা ঘটছে। সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় জেন জি বিক্ষোভকারীরা হামলা চালাচ্ছেন।

কাঠমান্ডুর মেয়র বিক্ষোভকারীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানালেও পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার কোন ইঙ্গিত মিলছে না।

কেপি শর্মা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার আগেই তার বাসভবনে ঢুকে পড়েছিল বিক্ষোভকারীরা। পরে সংসদ ভবনে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।

সরকারের মন্ত্রী, গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। কাঠমান্ডু ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় জেলায় রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি ও সরকারি অফিসে আগুন দেয়া হচ্ছে।

ব্যাপক জনরোষের মধ্যে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায় কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে। সেনা সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে মন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের হেলিকপ্টারে করে সেনা আশ্রয়ে নিয়ে এসেছেন।

শুধু সরকারি দল নয়, আগুন দেয়া হচ্ছে বিরোধী দলের অনেক নেতার বাড়িতেও।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় ওলির নেপাল কংগ্রেস পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়।

নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের প্রতিবাদে সোমবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রাণঘাতি রূপ পায়। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এদিন ১৯ জন মারা যায়।

এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। মঙ্গলবার কারফিউ উপেক্ষা করে শহরে শহরে সহিংস আন্দোলনে নামেন সরকার বিরোধীরা। তারা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে আগুন দিতে থাকেন।

পরে মন্ত্রীদের একের পর এক পদত্যাগের মধ্যে দুপুরে পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

নেপালের একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, এ আন্দোলন সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের প্রতিবাদে হলেও তা পরে রূপ নেয় দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে।

বেকারত্ব ও দুর্নীতি নিয়ে মানুষের ক্ষোভই কেপি শর্মার পতন ডেকে এনেছে বলে মনে করেন তিনি। আর তাতে ঘি ঢেলেছে সোমবার বিক্ষোভ দমনে সরকারি বাহিনীর বলপ্রয়োগ, ফলে দ্রুত পদত্যাগের পথ বেছে নিতে হয়েছে ওলিকে।

এই ক্ষোভ থেকেই তরুণরা রাজনীতিবিদদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, যা থামতে আরও কিছু সময় লাগবে- মনে করেন তিনি।