শক্তিশালী মুদ্রা: যে ১০ দেশের টাকার মান সবচেয়ে বেশি

বিশ্বের শক্তিশালী ১০ মুদ্রা

মরিয়ম খান

বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এখন আন্তঃদেশীয় অর্থনৈতিক লেনদেনে জড়িত। ব্যবসা, কেনাকাটা, চাকরি, ভ্রমণ, স্বাস্থ্যসেবা- নানা কারণে এক দেশের মুদ্রার সঙ্গে অন্য দেশের মুদ্রার বিনিময় বাড়ছে।

বিভিন্ন দেশের আলাদা আলাদা মুদ্রা থাকলেও বিশ্ব জুড়ে লেনদেনের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে মার্কিন ডলারের। তবে মার্কিন ডলারের তুলনায় আরও কিছু দেশের মুদ্রার মান বেশি।

একটি দেশের মুদ্রার বিনিময় হার, মুদ্রার স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক শক্তি, রাজস্ব নীতি, প্রাকৃতিক সম্পদ, বাণিজ্য সম্পর্ক- এসবের ভিত্তিতে মূলত মুদ্রার মানের ওঠানামা হয়।

মোটা দাগে বলা যায়, কোন দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ দেশটির মুদ্রা কতটা শক্তিশালী হবে তা নির্ধারণ করে।

নীচে যে ১০টি দেশের টাকার মান সবচেয়ে বেশি তার একটি তালিকা দেয়া হলো।

বিশ্বের ১০ শক্তিশালী মুদ্রা

১. কুয়েতি দিনার (KWD)

১ কুয়েতি দিনার সমান ৩.২৭ মার্কিন ডলার, এটিই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা।

কুয়েতি দিনার প্রথম ১৯৬০-এর দশকে চালু হয়েছিল। বহু বছর ধরে এটি সবচেয়ে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল মুদ্রাগুলোর একটি।

কুয়েতে প্রচুর পরিমাণে জ্বালানি সম্পদের মজুদ থাকায় অন্য দেশের তুলনায় দেশটির মুদ্রার বিনিময় হার সবচেয়ে বেশি।

২. বাহরাইনি দিনার (BHD)

১ বাহরাইনি দিনার সমান ২.৬৫ মার্কিন ডলার, এটি বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিশালী মুদ্রা।

বাহরাইনে ১৯৬৫ সালে দিনার চালু হয়। জ্বালানি সম্পদের মজুদের কারণে এই দেশটির মুদ্রার মানও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। ছোট দেশ হলেও প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে বাহরাইনের অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী।

৩. ওমানি রিয়াল (OMR)

১ ওমানি রিয়াল সমান ২.৬০ মার্কিন ডলার।

ওমানে এই মুদ্রার প্রচলন হয় ১৯৭০ এর দশকে। তেল ও গ্যাসের ওপর ভর করে চলা দেশটির অর্থনীতি ওমানি রিয়ালকেও শক্তিশালী মুদ্রায় রুপ দিয়েছে।

৪. জর্ডানিয়ান দিনার (JOD)

১ জর্ডানিয়ান দিনার সমান ১.৪১ মার্কিন ডলার।

জর্ডানিয়ান দিনার ১৯৫০ সালে চালু হয়। জর্ডানের অর্থনীতি মূলত শিল্পের উপর নির্ভরশীল। শক্তিশালী অর্থনীতির কারণে দেশটির মানও বেশি।

৫. ব্রিটিশ পাউন্ড (GBP)

১ ব্রিটিশ পাউন্ড সমান ১.৩৬ মার্কিন ডলার।

ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং হল বর্তমানে বিশ্বে প্রচলিত মুদ্রাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন। ১৭ শতকে যুক্তরাজ্যে পাউন্ড ব্যবহার শুরু হয়।

বিশ্বজুড়ে লন্ডনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব ব্রিটিশ পাউন্ডের মানকে এখনো শক্তিশালী রেখেছে।

৬. জিব্রাল্টার পাউন্ড (GIP)

১ জিব্রাল্টার পাউন্ড সমান ১.৩৫ মার্কিন ডলার।

ভূমধ্যসাগরে স্পেনের দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত ছোট ব্রিটিশ অঞ্চল জিব্রাল্টারে ১৯২০-এর দশকে এই পাউন্ড ব্যবহার শুরু হয়।

৭. কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ ডলার (KYD)

কেম্যান দ্বীপপুঞ্জের ১ ডলার সমান ১.২০ মার্কিন ডলার।

ব্রিটিশ অঞ্চল কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ ১৯৭২ সালে তাদের নিজস্ব ডলার চালু করে।

৮. সুইস ফ্রাঙ্ক (CHF)

১ সুইস ফ্রাঙ্ক সমান ১.২২ মার্কিন ডলার।

সুইস ফ্রাঙ্ক হল সুইজারল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডের পূর্বে অবস্থিত ছোট ইউরোপীয় দেশ লিচেনস্টাইনের সরকারী মুদ্রা। ১৮৫০ সালে সুইজারল্যান্ডে ও ১৯২০ সালে লিচেনস্টাইনে এটির ব্যবহার শুরু হয়।

বিশ্ব অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে সুইজারল্যান্ডের টাকার মানও বেশি।

৯. ইউরো (EUR)

১ ইউরো সমান ১.১৪ মার্কিন ডলার।

১৯৯৯ সালে চালু হওয়া ইউরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২০টি দেশের সরকারি মুদ্রা। স্বাভাবিকভাবেই এসব দেশের অর্থনীতি ইউরোকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী মুদ্রায় রুপ দিয়েছে।

১০. মার্কিন ডলার (USD)

মার্কিন ডলার হল বিশ্বের মুদ্রা বিনিময়ের প্রধান মাধ্যম। কিছু দেশের মুদ্রার চেয়ে ডলারের মান কম হলেও বিশ্বব্যাপী ব্যবহারের কারণে এটি সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে বিবেচিত হয়।