মাসুদ আলম, আম্মান
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় নতুন করে ফের ব্যাপক হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।
তেল আবিবের হামলায় অন্তত ৯ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছে হামাস সংশ্লিষ্ট গাজা সিভিল ডিফেন্স সংস্থা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দেশটির সেনাবাহিনীকে গাজায় ‘তীব্র’ হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়ার পরপরই এই অভিযান শুরু হয়।
এর ফলে গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনার জন্য ইসরায়েলের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
ইসরায়েল ও হামাস উভয় পক্ষই একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে।
নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি ‘স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন’ করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামাস আক্রমণ চালিয়েছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অন্যদিকে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ১২৫ বার এই চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
এসব ঘটনায় অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে সংস্থাটি দাবি করেছে।
আল জাজিরার গাজা সিটির প্রতিবেদক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজাজুড়ে ইসরায়েলের বিস্ফোরণ ও ড্রোনের শব্দ অব্যাহত রয়েছে।
নতুন করে ইসরায়েলি হামলার কারণ
যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলি বন্দীদের মৃতদেহ হস্তান্তর নিয়ে নতুন করে সংঘাত মাথাচাড়া দিয়েছে গাজায়।
এই উত্তেজনা নতুন করে বাড়ে, যখন ইসরায়েল জানায়- হামাস সোমবার জিম্মিদের যে কফিন হস্তান্তর করেছিল, তাতে কোন মৃত বন্দীর দেহাবশেষ ছিল না।
এদিকে হামাস দাবি করেছে, ইসরায়েল গাজার ভেতরে জিম্মিদের মৃতদেহ অনুসন্ধানে বাধা দিচ্ছে, যার ফলে বন্দীদের দেহ হস্তান্তর সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
গাজা যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে প্রাণঘাতি হামলার মাধ্যমে গাজায় সংঘাত শুরু হয়।
হামাসের হামলায় ১১৩৯ জন ইসরায়েলি মারা যান। সেসময় ২ শতাধিক ইসরায়েলিকে অপহরণ করে নিয়ে আসে হামাসের যোদ্ধারা।
এই জিম্মিদের ফেরত দেয়া নিয়েই নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে গাজায়।
৭ অক্টোবরের হামলার পরই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে, যা এখনো চলছে।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এই অভিযানে এ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৫২৭ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৫ জন।
