ভারতে একটি বিলাসবহুল বাসে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনায় ১৯ যাত্রী নিহত হয়েছেন।
দেশটির আন্ধ্র প্রদেশের কুরনুল জেলায় শুক্রবার ভোরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
বাসটি হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরু যেতে রাত ১২টার দিকে যাত্রা করেছিল। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে কুরনুলের উলিন্দাকোন্ডা এলাকার মহাসড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তায় থাকা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনার পর মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে আটকে গেলে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। মুহূর্তেই পুরো বাসে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
কুরনুল জেলার কালেক্টর ডা. এ সিরি এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর বাসের মূল দরজার বৈদ্যুতিক তার কেটে যাওয়ায় দরজাটি বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীরা বের হতে না পেরে জানালার কাঁচ ভেঙে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন।
কুরনুল জেলার পুলিশ সুপার বিক্রান্ত পাটিল বলেন, এসি বাসটির অনেক যাত্রী ঘুমিয়ে থাকায় সময়মতো বের হতে পারেননি।
দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের ১৫ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যাত্রীদের অনেকেরই হাত-পা ভেঙে গেছে বা ঝলসে গেছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য বাইরেড্ডি শাবারি জানান, “বাসটি মাত্র ২-৩ মিনিটেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও বিস্ফোরণের কারণে তারা তেমন কিছুই করতে পারেনি।”
দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছে, কারণ অনেক লাশ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু জানিয়েছেন, নিহতদের পরিবারকে সব ধরনের সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে। আহতদের চিকিৎসার দায়িত্বও সরকার নিচ্ছে।
চলতি মাসেই ভারতের রাজস্থানের জয়সলমের-জোধপুর মহাসড়কে একইভাবে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরে ২০ জন যাত্রী পুড়ে মারা যান।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং নির্গমনপথের মান ঠিকভাবে মানা না হলে এমন প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা আরও বাড়তে পারে।
