আফ্রিকার ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র কেপ ভার্দে। জনসংখ্যার হিসেবে ৫ লাখের একটু বেশি। তবে, ছোট এই রাষ্ট্রটি ফুটবল ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। দেশটি প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। রোববার রাতে তারা এসওয়াতিনিকে ৩–০ ব্যবধানে হারিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে।
কেপ ভার্দে এই জয়ের মাধ্যমে গ্রুপ ‘ডি’-এর শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিলো। ম্যাচে দলের পক্ষে গোল করেন ডেইলন লিভ্রামেন্তো, উইলি সেমেদো এবং স্টোপিরা। এই জয়ের ফলে তারা আফ্রিকার শক্তিশালী দল ক্যামেরুনকে পিছনে ফেলে ইতিহাস গড়লো।
ম্যাচ শেষে কোচ পেদ্রো বুবিস্তা ব্রিতো বলেন, এটি শুধু ফুটবলের জয় নয়, আমাদের মানুষের আত্মবিশ্বাসের জয়। কেপ ভার্দে এখন বিশ্বমঞ্চে নিজের পতাকা উড়াবে।
বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার খবর প্রকাশের পর রাজধানী প্রাইয়াসহ বিভিন্ন দ্বীপে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তায় নেমে লোকজন পতাকা উড়িয়ে গান গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসে মারিয়া নিউভেস এক বিবৃতিতে বলেন, এটি আমাদের জাতীয় ইতিহাসের গর্বের মুহূর্ত। কেপ ভার্দে বিশ্বমঞ্চে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে।
রেকর্ডের পাতায় নাম কেপ ভার্দের
এই অর্জনের মাধ্যমে কেপ ভার্দে বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম জনসংখ্যার দেশ, যারা পুরুষ বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৮ সালে আইসল্যান্ড ছিল সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে এই কীর্তি গড়েছিল। কেপ ভার্দে এখন আফ্রিকার সপ্তম দেশ হিসেবে প্রথমবার বিশ্বকাপে জায়গা পেল।
কেপ ভার্দে ফুটবলের উত্থান
কেপ ভার্দের ফুটবলের ধারাবাহিক উন্নতির শুরু ২০১৩ আফ্রিকা কাপ অব নেশনস থেকে। যেখানে তারা কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিল। এরপর ২০২৩ সালেও একই সাফল্য পায়। এবার বিশ্বকাপে পা রাখায় তারা আফ্রিকার উদীয়মান শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করল।
দেশ ও অর্থনীতির প্রেক্ষাপট
অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত দ্বীপদেশ কেপ ভার্দের জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ২৫ হাজার। রাজধানী প্রাইয়া।
দেশটির অর্থনীতি মূলত পর্যটন, পরিষেবা খাত ও প্রবাসী রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরশীল। কৃষি ও মৎস্য খাতও অর্থনীতিতে সীমিত ভূমিকা রাখে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালে দেশটির মোট জিডিপি ছিল প্রায় ২.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর মাথাপিছু আয় প্রায় ৪,৫০০ ডলার।
২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে। তুলনামূলক ছোট দল হওয়ায় কেপ ভার্দের জন্য চ্যালেঞ্জ অনেক, তবে তাদের দৃঢ়তা ও শৃঙ্খলাপূর্ণ ফুটবলই হতে পারে সবচেয়ে বড় শক্তি।
