দেশব্যাপী বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সরকার পতনের পর কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন স্থানে এখনো অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট অব্যাহত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী নেপালের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেয়। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাপ্রধান জেনারেল আশোক রাজ সিগদেল।
ভাষণে সেনাপ্রধান বলেন, নতুন সরকার না আসা পর্যন্ত হিমালয়ের এই দেশটিতে শান্তি নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়েছে নেপালের সেনাবাহিনী। দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। যারা ভাঙচুর, লুটপাট বা ব্যক্তিদের উপর হামলা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেনাপ্রধান শান্তিপূর্ণ উপায় খুঁজে বের করার জন্য বিক্ষোভকারীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
ভাষণে বিক্ষুব্ধ জনতাকে উদ্দেশে করে বলেন, “আমরা আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সংলাপে এগিয়ে আসার আহ্বান করছি। আমাদের বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে, ঐতিহাসিক ও জাতীয় ঐতিহ্য ও জনসাধারণের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিক্ষোভে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেন সেনাপ্রধান আশোক। তিনি বলেন, নেপালের ইতিহাসের শুরু থেকেই সেনাবাহিনী সর্বদা এমনকি কঠিন পরিস্থিতিতেও কাজ করে গেছে। তাই নেপালের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতা, জাতীয় ঐক্য এবং নেপালি জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত ৮ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে জেন-জি ব্যানারে তরুণরা। এরপর তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হলে আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়। এসময় ২১ জনের মতো নিহত হয়। এই ঘটনায় ৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ জনগনও সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে আন্দোলন করে। এতে দেশটির পার্লামেন্ট ভবন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, এমপি-মন্ত্রীর বাসভবন, রাজনৈতিক কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও আগুন দেয়। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। এমনকি আন্দোলনের মুখে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি দেশত্যাগে বাধ্য হয়।
