থাইল্যান্ডে স্কুল শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে কনডম বিতরণে সরকারি উদ্যােগ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে দেশটি।
সম্প্রতি থাই সহকারী জনস্বাস্থ্য মন্ত্রী স্কুলে কনডম বিতরণ ও যৌন শিক্ষা প্রদানের প্রস্তাব করেছেন।
দেশজুড়ে তরুণদের মাঝে এইচআইভি সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে এই প্রস্তাব দেন চাইচানা দেশদেশো।
থাইল্যান্ডের প্রগতিশীল স্বাস্থ্য কর্মী ও শিক্ষাবিদরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, দেশটিতে তরুণরাই সবচেয়ে বেশি গর্ভপাত ও যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এজন্য স্কুল শিক্ষার্থীদের সহজে কনডম ব্যবহারের সুযোগ দেয়াকে তারা জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
অন্যদিকে অভিভাবক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সরকারের পরিকল্পনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
তাদের আশঙ্কা, স্কুল পর্যায়েই শিক্ষার্থীদের হাতে কনডম পৌঁছে গেলে তারা খুব কম বয়সেই যৌনতায় জড়িয়ে পড়বে।
এজন্য তারা শক্তভাবে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন।
থাইল্যান্ডের রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রতি বছর নতুন করে ৯ হাজারের বেশি মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত হচ্ছেন।
আর এর অর্ধেকের বয়সই ১৫ থেকে ২৪ বছর।
এই বয়সীদের কনডম ব্যবহার না করার প্রবণতাকেই এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে বলছে রোগ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সীরা আশঙ্কাজনক হারে গর্ভধারণের শিকার হচ্ছে; যার পিছনেও কনডম ব্যবহার না করাকে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এসব ঝুঁকি এড়াতে থাই সরকার গত এক যুগ ধরে তরুণদের মধ্যে বিনামূল্যে মিলিয়ন মিলিয়ন কনডম বিতরণ করে এসেছে।
প্রতিবছর ভালবাসা দিবসে তরুণদের বিনামূল্যে কনডম দেয়া দেশটিতে রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ২০২১ সাল থেকে থাই তরুণরা প্রতি সপ্তাহে সরকারের কাছ থেকে ১০টি করে কনডম পেয়ে থাকে।
শিক্ষার্থীদের কনডম ব্যবহারে বিরোধিতার জবাবে দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরনো ধারণা ও অহেতুক ভয় স্বাস্থ্যের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেতে পারে না।