বর্বরতা: ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে পাথর মেরে ব্যবসায়ীকে হত্যা

ঢাকার রাস্তা এমন এক বর্বর দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছে, যার ভিডিও ফেসবুকে ছড়ানোর পর অনেকেই অসুস্থ বোধ করছেন।

বুধবার বাংলাদেশের পুরান ঢাকার ব্যস্ততম এলাকায় একজন ভাঙারি ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে থেঁতলে হত্যা করা হয়।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখা যায়, নৃশংস এই ঘটনা অনেকে দাঁড়িয়ে দেখলেও ব্যবসায়ী সোহাগকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেন নি।

এই ঘটনায় বাংলাদেশ জুড়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সাধারণ মানুষ এর জন্য দেশের বিচার ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক পরিবেশকে দায় দিচ্ছেন।

মিটফোর্ডে কি ঘটেছিল ব্যবসায়ী সোহাগের সঙ্গে?

ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যা করা হয় মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে।

এটি ঢাকার একটি ব্যস্ত এলাকা।

ভিডিওতে দেখা যায়, একজন প্রায় উলঙ্গ ব্যক্তি নিথর অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন।

কয়েকজন যুবক তার শরীর ও মাথায় পাথর বড় টুকরো মারতে থাকে।

সোহাগের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত এই বিভৎস্য ঘটনা চলতে থাকে।

আরেকটি ভিডিওতে, নিহত সোহাগের মরদেহের উপরও হত্যাকারীদের লাফাতে দেখা যায়।

এ সময় আশেপাশেই বেশ কয়েকজন পথচারীকে দেখা যায়, যারা নিরাপদ দূরত্বে থেকে ঘটনা দেখছিলেন।

যারা এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন তারা যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ঘটনা সামনে আসার পর যুবদল ২ নেতাকে বহিষ্কার করেছে।

নিহতের বোন এই ঘটনায় মামলা করার পর আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ৪ জনকে আটক করেছে।

পুলশি বলছে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকে এই ঘটনা ঘটেছে।

ক্ষোভ-হতাশা

এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশ মানুষকে তীব্রভাবে নাড়া দিয়েছে।

বাংলা ইনসাইট টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ঢাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেছেন, ঘটনার ভিডিও দেখার পর তারা নিজেদের স্বাভাবিক ভাবতে পারেন নি।

এ ধরণের ঘটনাও ঘটতে পারে, তা তাদের কাছে অবিশ্বাস।

ঢাকার মগবাজারের রানা হাসান জানিয়েছেন, বুধবারের এই ঘটনাটি শুক্রবার ভাইরাল হওয়ার পর তিনি জানতে পারেন।

“ফেসবুকে ঢুকলেই ভিডিওটি সামনে আসছে। আমি হতাশ, নিতে পারছি না। অসুস্থ বোধ করছি, এখন আর ফেসবুকে ঢুকছি না।”

রানা হাসান এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

মিরপুরের একজন বাসিন্দা সাবিনা আক্তার বলছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যে মানুষের নিরাপত্তা নেই, তার একটি নমুনা এই ঘটনা।

“এত এত মব হলো, সরকার কি কোন বার্তা দিতে পেরেছে? মানুষ এখন মনে করছে সে যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে, এমনকি খুনও।”

ক্ষুব্দ এই নারী বলেন, “পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিলে থানা ঘেরাও করা হচ্ছে। তাহলে দেশটা সোজা হবে কিভাবে?

“আর আমাদের যে বাজে সংস্কৃতি, সেখানে জীবনের কোন দাম নেই। বিকারহীন মানুষ ক্ষমতার গন্ধ পেলে তারা এরকম করতেই থাকবে।”