সঞ্জয় রায়
বাংলাদেশ-ভারতের রাজনৈতিক অস্থিরতা সীমান্তের দুই পাড়ের অনেক মানুষকে অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে।
আসামের শিক্ষার্থীদের একটি অংশও ঢাকা-নয়াদিল্লি সম্পর্কের অবনতিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ তাদের জন্য এখন বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।
শিক্ষা ছাড়া আসামের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়েছে।
আসামের ভিসা সেন্টারগুলো তথ্য বলছে, বাংলাদেশের ভিসা প্রাপ্তি ৬০ শতাংশের বেশি কমে গেছে।
যা আসাম-বাংলাদেশের বহুমুখী সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত।
মিয়ানমারের ছোট অংশের বাইরে বাংলাদেশের স্থল সীমান্তের পুরোটাই ভারতের সঙ্গে।
এই সীমান্ত বিভাজন ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে সেভেন সিস্টার্স নামের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করছে দেশটির পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যে।
দীর্ঘ সীমান্ত থাকায় দুই দেশের মানুষ বাণিজ্য, চিকিৎসা, পর্যটন, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ নানাভাবে সম্পৃক্ত।
গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকেই এই সম্পর্কে চিড় ধরেছে। কমেছে আন্তঃসীমানা যোগাযোগ।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্যগুলোর একটি আসাম। বাংলাদেশের সঙ্গে এই রাজ্যটির সীমান্ত ২৬২ কিলোমিটারের।
আসামের নাগরিকরা গোয়াহাটি, শিলচর ও বনগাঁইগাও কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের ভিসা পেয়ে থাকে।
এই তিনটি ভিসা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আগে দিনে ৫০-৫৫ টি ভিসা ইস্যু করা হতো। এখন সেটি নেমে এসেছে ১৫-১৮ টিতে।
এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে আসামের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে।
আসাম থেকে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে যায় মূলত মেডিকেল শিক্ষার জন্য।
দুই দেশের সম্পর্কের অবনতির ফলে এখন আসামের অনেক পরিবারকে তাদের সন্তানদের চিকিৎসা শিক্ষা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।
কারণ, গত ১ বছরে মাত্র অল্প কিছু শিক্ষার্থী বাংলাদেশের শিক্ষা ভিসা পেয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে বহু রোগী আসামে চিকিৎসা নিতে যান।
বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা প্রায় বন্ধ থাকায় আসামের হাসপাতালগুলোও বাংলাদেশি রোগী পাচ্ছে না।
ফলে আসামের মেডিকেল ট্যুরিজমও ক্ষতির মুখে পড়েছে।
