রূপনগরে আগুন: পুড়ে অঙ্গার হওয়া ৯ জনের মরদেহ শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা প্রয়োজন

রাজধানীর রূপনগরে ওয়াশিং ফ্যাক্টরি ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনে ১৬ জনের মৃত্যু, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট, উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি।

বিকেল পর্যন্ত পোশাক কারখানা থেকে নয়জনের মরেদহ উদ্ধার করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, যে ৯টি মরেদহ উদ্ধার করা হয়েছে, সবগুলোই পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। মরেদহ দেখে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়। পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।

এর আগে বিকেলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারখানায় তল্লাশি অভিযান এখনো চলমান। আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি দিয়ে, ড্রোন দিয়ে এসব কার্যক্রম করছি। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

তিনি জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় এখনো দুর্ঘটনাস্থলের সব স্থানে তল্লাশি চালানো যায়নি। তল্লাশি শেষে হতাহতের বিষয়ে চূড়ান্তভাবে জানা যাবে। এছাড়া দুর্ঘটনায় আহত ৪ জনকে বার্ণ ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে রূপনগরের শিয়ালবাড়িতে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন ধরে যায়। পরে সে আগুন পাশের ভবনের ওয়াশিং ফ্যাক্টরিতেও ছড়িয়ে পড়ে।

মারা যাওয়া ৯ জন এই ফ্যাক্টরির ভিতরেই আটকা পড়ে গিয়েছিলেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবন দুটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। মুহূর্তেই পুরো এলাকা ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ছেয়ে যায়। আগুন লাগার পরপরই সেখানে বিকট বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়।

এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা সব শ্রমিকই বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন বলে দাবি করেন।

তবে আগুনের আঁচ কমার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের তল্লাশিতে ভবনের ২য় ও ৩য় তলা থেকে ১৬ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে আগুনে পুরো এলাকায় কেমিক্যালের বিষাক্ত গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে ঘটনাস্থলের ৩০০ গজের মধ্যে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট। বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্তও আগুন পুরো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুনের ক্ষতচিহ্ন চারপাশে ছড়িয়ে আছে। পুড়ে যাওয়া ভবনের সামনে থাকা একটি গাড়ি পুরো ঝলসে যেতে দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল মিয়া বাংলা ইনসাইট টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার ছিল না।”

রূপনগর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আহাদ এ ধরণের গোডাউনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন।

বাংলা ইনসাইট টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ঢাকায মাঝে মাজেই এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটছে। ঘটনার পর দেখা যায়, নানা অব্যস্থাপনা ছিল।

“কর্তৃপক্ষের উচিত এগুলো নিয়মিত তদারকি করা। মানুষ মারা গেলে তদন্ত করে তো লাভ নেই।”