দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো। এবার ভিসা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্তে মার্কিন নাগরিকত্ব প্রত্যাশীদের আরেকটু বেশিই ভাবিয়ে তুলবে। সেই ভিসাটি হল- এইচ-১বি ভিসা। এই ভিসা পেতে আবেদন করতেই ফি লাগবে ১ লাখ মার্কিন ডলার।
নতুন ফি আরোপের নির্বাহী আদেশটি শুক্রবার রাতে র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই করেছেন। এমনিকি এই আদেশটি আজ রোববার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
আসুন জেনে নেই এইচ-১বি ভিসা কি?
এইচ-১বি ভিসা হল এক ধরনের অ-অভিবাসী ভিসা। এই ভিসার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীরা সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্টে অবস্থান করে সেখানকার সংস্থাগুলোর হয়ে কাজ করতে পারেন। প্রাথমিকভাবে এইচ-১বি ভিসার মেয়াদ থাকে তিন বছর। তবে তা সর্বোচ্চ ৬ বছর পর্যন্ত তা বৃদ্ধি করা যায়। এই সময়ের মধ্যে আমেরিকার গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন কর্মীরা। গ্রিন কার্ড বা স্থায়ী নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে এইচ-১বি ভিসার মেয়াদ ইচ্ছামতো বৃদ্ধি করা যায়।
এইচ -১বি ভিসা পেতে কি জটিলতা সৃষ্টি হল?
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকায় গিয়ে নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ এখন কিছুটা জটিল হলো। বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসায় যে ফি আরোপ করা হয়েছে তা ‘অস্বাভাবিক’ বলে মনে করছেন অনেকেই।
ভিসা ফি কাদের জন্য:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নতুন এইচ-১ বি ভিসা নীতির বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। নীতিতে বলা আছে, নতুন দক্ষ কর্মীদের জন্য ১ লাখ ডলার ফি প্রতি আবেদনের জন্য ধার্য করা হবে এবং বর্তমান ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, এইচ-১ বি ভিসা আবেদন ফি বার্ষিকভাবে প্রদান করতে হবে এবং নতুন ভিসার পাশাপাশি নবায়নের জন্য আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। তবে, যারা আগে এই ভিসার জন্য আবেদন করেছেন তাদের ফি দিতে হবে না।
তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট স্পষ্ট করে বলেছেন,এই ফি শুধুমাত্র নতুন ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এবং এই নিয়ম “কোনও বর্তমান ভিসাধারীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে প্রভাবিত করে না।
যাদের ইতিমধ্যেই এই ভিসা আছে এবং বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন তাদের পুনঃপ্রবেশের জন্য ফি দিতে হবে না। এটি শুধুমাত্র নতুন ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, নবায়নকারীদের ক্ষেত্রে নয় এবং বর্তমান ভিসাধারীদের ক্ষেত্রেও নয়।
নতুন নীতিতে এক বছর পর এই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে ট্রাম্প প্রশাসন যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে এটি টিকিয়ে রাখা আমেরিকার স্বার্থে, তাহলে এর মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে বলেও হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জানান।
প্রযুক্তি শিল্পে এই ভিসা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং লটারি পদ্ধতির মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। প্রায় তিন-চতুর্থাংশ পারমিট ভারতীয় নাগরিকদের। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীনা নাগরিক।
এই ভিসা নিয়ে অন্যরা কি বলছেন?
এই সিদ্ধান্ত মার্কিন চেম্বার অফ কমার্স উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, “আমরা কর্মচারী, তাদের পরিবার এবং আমেরিকান নিয়োগকর্তাদের উপর প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
এদিকে, জনপ্রিয় চীনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ রেডনোটে জানিয়েছে, অনেক এইচ-১বি ভিসাধারীরা নতুন ফি আদায়ের আশঙ্কায় কেউ কেউ বিদেশে অবতরণের মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন।
সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল জানিয়েছে, শুক্রবার দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমন কিছু বিমানে থাকা ব্যক্তিরা আশঙ্কা করেছিলেন যে তাদের আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
