মুহাম্মদ ফেরদাউস
বর্ষায় হাওর, ঝরনা, পাহাড় ভ্রমণ এখন খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। এত কিছুর ভীড়ে বৃষ্টির দিনে আপনার আদর্শ ভ্রমণ স্থান হতে পারে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
বৃষ্টিতে কক্সবাজারকে আপনি খুঁজে পাবেন এক ভিন্ন রুপে, মোহনীয় সৌন্দর্যের এই রুপ অন্য সময়ের তুলনায় আলাদা করে তুলে সমুদ্র সৈকতকে।
বৃষ্টিতে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
যত দিন যাচ্ছে মানুষের ভ্রমণের আগ্রহ তত বাড়ছে, তারা খুঁজে নিচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন পর্যটন স্পট। শুধু শীত-বসন্তে ভ্রমণের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে মানুষ এখন বর্ষায়ও সমান তালে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বর্ষায় বাংলাদেশে ভ্রমণের জন্য এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে সিলেট অঞ্চল। হাউজবোটে করে হাওর ঘুরে বেড়াতে অনেকে বর্ষাকেই বেছে নিচ্ছেন।
এছাড়া রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পান্থুমাই, জাফলংসহ সিলেটের বিভিন্ন ভ্রমণ স্পট ঘুরে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় হল বর্ষাকাল। অর্থাৎ হাওর, পাহাড়, ঝরণা- বৃষ্টিতে সব একসঙ্গে উপভোগ করার জন্য দুর্দান্ত সময় কাটাতে পারেন সিলেটে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলও বর্ষায় ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে। পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মেঘ ছুঁয়ে দেখার পাশাপাশি ঝরণার অনিন্দ্য সৌন্দর্য উপভোগ করতে বৃষ্টির দিনে চলে যেতে পারেন এই অঞ্চলে।
সে তুলনায় কক্সবাজার ভ্রমণ নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও বর্ষায় সমুদ্র সৈকত হতে পারে ছুটি কাটানোর অসাধারণ জায়গা।
বর্ষায় কেন কক্সবাজার ভ্রমণ করবেন?
পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের সৌন্দর্য নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই। সমুদ্রের নেশা লাখ লাখ পর্যটককে টেনে আনে কক্সবাজারে। বলা যায়, বাংলাদেশের পর্যটনের প্রধান বিজ্ঞাপনই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
তবে ছুটির দিন ছাড়া কক্সবাজারে পর্যটকদের ঢল নামে মূলত শরৎ থেকে বসন্ত পর্যন্ত। বলা যায়, গ্রীষ্ম ও বর্ষায় অনেকেই কক্সবাজারকে এড়িয়ে চলেন।
এরপরও ঘোর বর্ষায় কক্সবাজার আসুন, আর সমুদ্রের তীরে অকৃত্রিম ভালো লাগার মুহুর্তগুলো উপভোগ করুন। এই সময়ে সমুদ্রের তীব্র গর্জন আর বড় বড় নান্দনিক ঢেউ যে কারো মন মাতাবে।
আপনি যদি প্রকৃতি, সমুদ্র, মাছ- সর্বোপরি ভ্রমণ পিপাসু হন তাহলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বর্ষায় আপনাকে দিবে ভিন্ন অনুভূতি।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের একদিকে সমুদ্র, অপরদিকে সুউচ্চ পাহাড় মাঝখানে মেরিন ড্রাইভে সারি সারি ঝাউবাগান।
সকাল-বিকেল, সন্ধ্যা-রাত বর্ষায় সময়ের সাথে সাথে সমুদ্রের রুপ বদলায়। এই রুপ বদলানো সমুদ্রের সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দেয় বৃষ্টি। আর সমুদ্রের বিশালতা ছুঁয়ে যায় মনকে।
বর্ষায় কক্সবাজারে পর্যটক অন্য সময়ের তুলনায় কম থাকায়, কোন ঝামেলা ছাড়াই আপনি সমুদ্র সৈকতকে আরও ভালভাবে উপভোগ করার সুযোগ পাবেন। এছাড়া প্রায় সকল হোটেল-মোটেলে পেয়ে যাবে ৫০ শতাংশ নিশ্চিত ছাড়। সহজেই পেয়ে যাবেন সমুদ্রের তাজা মাছের স্বাদও।
কক্সবাজার যাবেন যেভাবে, ভাড়া কত?
কক্সবাজারে রেলপথ, সড়কপথ ও আকাশ পথে যেতে পারবেন। ঢাকাসহ দেশের যে কোন এলাকা থেকেই কক্সবাজারে যাতায়াতের ভালো ব্যবস্থা রয়েছে।
কক্সবাজারে বিমান ভাড়া ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পড়তে পারে। ছুটির দিনে চাহিদা বেশি থাকায় শেষ মুহুর্তে বিমানের টিকেট কাটলে খরচ আরও বেশি পড়তে পারে।
এসি ও নন এসি ভেদে কক্সবাজারের বাস ভাড়া ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা পড়তে পারে।
আসন অনুযায়ী কক্সবাজারের ট্রেন ভাড়া ৬৯৫ থেকে ২৩৮০ টাকা পড়বে।
কক্সবাজারে থাকার খরচ
কক্সবাজারে এলাকাভেদে ১০০০ টাকার মধ্যেও থাকার হোটেল পেয়ে যেতে পারেন। হোটেল অনুযায়ী ৫-১০ হাজার টাকার রুমও রয়েছে।