নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের বিস্তীর্ন অঞ্চলে পানি সংকট তীব্র হওয়ার চিত্র ধরা পড়েছে দেশটির সরকারি প্রজ্ঞাপনে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সরকার দেড় শতাধিক ইউনিয়নকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এসব অঞ্চলে পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে ১১টি নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, যথাযথ অনুসন্ধান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এসব এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের পানি সংকটাপন্ন এলাকা
রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার ২৫টি উপজেলার ৪৭টি ইউনিয়নকে অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার।
এছাড়া এ ৩ জেলার ৪০টি ইউনিয়নকে উচ্চ পানি সংকটাপন্ন ও ৬৬টি ইউনিয়নকে মধ্যম মাত্রার পানি সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।
এর বাইরে চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার ৫টি মৌজা অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন ও ৩টি মৌজা উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকার মধ্যে পড়েছে।
পটিয়া উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ৭টি মৌজাকে অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন, ৯টি ইউনিয়নের ২৭টি মৌজাকে উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা ও ৮টি ইউনিয়নের ৩০টি মৌজাকে মধ্যম পানি সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।
পানি সংকটাপন্ন এলাকার জন্য ১১ নির্দেশনা
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সংকটাপন্ন এলাকাযর জন্য ১১টি নির্দেশনা দিয়েছে।
১। পানি সম্পদের অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যবহার যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
২। খাবার পানি ছাড়া অন্য কোন কারণে নতুন করে নলকূপ স্থাপন ও ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধ থাকবে।
৩। ভূগর্ভস্থ পানি নির্ভর শিল্প বা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না।
৪। খাল, বিল, পুকুর, নদী তথা কোন জলাধারের শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না এবং জলাশয় জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে।
৫। জনগণের ব্যবহারযোগ্য খাস জলাশয় ও জলমহাল ইজারা দেওয়া নিরুৎসাহিত করতে হবে।
৬। জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত করা যাবে না।
৭। কোন জলাধারের সমগ্র পানি আহরণ করে নিঃশেষ করা যাবে না।
৮। ভূমি এবং পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট বা পরিবর্তন করতে পারে এমন কাজ করা যাবে না।
৯। নদী-জলাশয়-লেক-জলাভূমিতে বসতবাড়ি, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তরল ও কঠিন অপরিশোধিত বর্জ্য নির্গমন এবং দূষণ করা যাবে না।
১০। অধিক পানি নির্ভর ফসল উৎপাদন নিরুৎসাহিত বা সীমিত করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে পানি সাশ্রয়ী ফসলের আবাদ বৃদ্ধি করতে হবে।
১১। জনসাধারণের সুপেয় পানি ও গৃহস্থালি কাজে পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় অন্যান্য নির্দেশনা প্রদান করা যাবে।
