ইডিসিএল এর ‘অলিখিত সম্রার্ট’ ভাতিজা নাজমুল হুদা

রাষ্ট্রীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইডিসিএল এ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে আলোচনায় উঠে এসেছেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামাদ মৃধার ভাতিজা নাজমুল হুদা।

রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটি এখন সম্পূর্ণ ব‍্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরে পরিণত হয়েছে- যা নিয়ে ইডিসিএল এর ভেতরে-বাইরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ভাতিজা নাজমুল তার একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে ইডিসিএলে সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।

গত বছর সরকার পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের যে উদ্যােগ ছিল, তার পরিবর্তে নাজমুল হুদার কর্মকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানটি ঘিরে অনিয়মের পুরনো বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোন কোন ক্ষেত্রে অনিয়ম আগের অব্যবস্থাপনাকেও ছাড়িয়ে গেছে।

ইডিসিএল এর একজন কর্মীর দাবি, নাজমুল হুদা প্রতিষ্ঠানটিতে ‘ফ্যাসিবাদের আত্মা’ হিসেবে পরিচিত। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরীর ঘনিষ্ট সহযোগী ছিলেন।

তার ভাষ্য, “নাজমুল হুদা নিক্সনের ব‍্যবসায়িক পার্টনার এবং দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ৫ই আগষ্টের পর আরও অনেকের মত তিনিও রাজনৈতিক পরিচয় বদলে ফেলেছেন।”

ফলে ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও হুদা দাপটের সঙ্গেই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ।

বলা হচ্ছে, ইডিসিএল ঘিরে অপকর্ম ও দুর্নীতির ছোট থেকে বড় যত রকমের অভিযোগ- এর বড় অংশ কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি।

নাজমুল হুদা এখন প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, এর পাশাপাশি এমডির ব‍্যক্তিগত সহকারী হিসাবে দায়িত্বে আছেন; যা তার ক্ষমতার মূল শক্তি।

ইডিসিএলের আরেকজন কর্মীর অভিযোগ, “তিনি এই পদে বসে নিয়মবহির্ভূত নিয়োগ ও পদোন্নতি, ছাঁটাই হওয়া কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে পুনর্নিয়োগসহ সব বিভাগেই অবৈধ হস্তক্ষেপ করছেন।

“এমনকি তার চাচা এমডি সামাদ মৃধাও জানেন না, তার ক্ষমতার প্রভাবে এখানে কি কি হচ্ছে।”

এছাড়া টেন্ডার ও সরবরাহ কার্যক্রমে অল্প কয়েকটি কোম্পানিকে সুবিধা দিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা নিশ্চিত করার অভিযোগও রয়েছে হুদার বিরুদ্ধে। এসব অনিয়মে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে ইডিসিএলের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “বিষয়গুলো আমরা দেখছি। একজন ব্যক্তির জন্য পুরো প্রতিষ্ঠানের দুর্নাম হতে পারে না।”

অভিযোগের বিষয়ে নাজমুল হুদার বক্তব্য জানতে পারেনি বাংলা ইনসাইট টোয়েন্টিফোর ডটকম।

(চাকরির নিরাপত্তা বিবেচনায় প্রতিবেদনে বক্তব্য প্রদানকারীদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।)