শরতের শুভ্রতায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

মো: রাব্বি হাসান, ববি প্রতিনিধি

শরতের নীলকাশে সাদা তুলোর মতো মেঘের ভেলার ভেসে চলা- বাংলার চিরায়ত সৌন্দর্যের এক প্রতীক হয়ে আছে।

কীর্তনখোলা নদীর জলে সেই মেঘ যখন প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে- তখন এক ঐশ্বরিক প্রশান্তি ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে।

কিছুটা দূরেই প্রকৃতির মাঝে দাঁড়িয়ে আছে এক দৃঢ়, রক্তিম অঙ্গীকারের প্রতীক- ৫৩ একরের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে লাল ইটের সাম্রাজ্যে ডানা মেলে সহস্র স্বপ্ন।

শরতের প্রকৃতি লাল ইটের ক্যানভাসে নৈসর্গিক কোমলতায় এঁকে দিয়েছে কাশফুলের আলপনা। ফলে ক্যাম্পাসের যেখানেই এখন চোখ যায়- সেখানেই শুভ্রতার জয়গান।

​আর এই ঐন্দ্রজালিক দৃশ্যের টানে প্রতি বছর শরৎ এলেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভীড় করেন অসংখ্য দর্শনার্থী। লাল ইটের কাঠামো আর শুভ্র কাশফুল- এই বৈপরীত্য তাদের মনকে যেন এক ভিন্ন জগতে নিয়ে যায়।

​বরিশাল শহর থেকে আসা এক দর্শনার্থীর ভাষ্য, “ছবিতে, ভিডিওতে অনেকবার দেখেছি এই কাশফুল। তারপরও নিজ চোখে দেখার জন্য স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চলে এলাম, সত্যিই দেখতে ছবির মতই সুন্দর।”

পূজোর ছুটিতে কুয়াকাটায় বেড়ানোর ফাঁকে ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী কাজি তাওহিদুল ইসলাম অভিকেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে টেনে এনেছে শরতের শুভ্রতা।

তিনি জানালেন, অনলাইনে ছবি-ভিডিও দেখেই মনের মধ্যে ‘কাশফুলের স্বর্গরাজ্যে’ ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা জমিয়ে রেখেছিলেন।

“কে না চায় এমন সৌন্দর্যময় জায়গায় একবার ঘুরে না আসতে! তাই ভাবলাম, ঢাকায় যাওয়ার পথে শহরের কোলাহলকে দূরে ঠেলে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এই সৌন্দর্যটা উপভোগ করেই যাই”, বলেন অভি।

আর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে এই সময়ের ক্যাম্পাসই ‘অবসরের আলস্য’ কাটানোর সেরা সময়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী খাইরুল ইসলাম মাহিম বলেন, “এই কাশফুল আমাদের ক্যাম্পাসের ‘সফট পাওয়ার’। ক্লাসের ফাঁকে কিংবা বিকেলের অবসরে যখন এই কাশফুলের বুক চিরে হাঁটি, তখন যেন সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।

“ক্যাম্পাসের এই নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন- যা দেখে সত্যিই গর্ববোধ হয়।”

​শরৎ কেবল একটি ঋতুর পরিবর্তন নয়, কাশফুলের সঙ্গে এই জ্ঞানালোকের সাম্রাজ্যের এক চিরন্তন মৈত্রী বন্ধনও।